ব্যায়ামের সঠিক সময় নিয়ে অনেকেই দ্বিধা দন্দে থাকেন ।অনেকেই ভাবেন সকালে ভাল আবার অনেকে রাতে না হয় বিকালে ব্যায়াম এর উপযুক্ত সময়।
তবে ম্যাক্সিমাম লোক সকালের সময়টিকে ব্যায়ামের জন্য উপযোগী সময় ভাবেন। ব্যায়ামের সঠিক সময় কোনটি, এই নিয়ে অনেকের মধ্যেই নানা দ্বিধাদ্বন্দ্ব ও ভ্রান্ত ধারনা আছে।
প্রকৃত পক্ষে ব্যায়াম করার কোনো নির্দিষ্ট ধরাবাধার সময় নেই। আপনি যখনই সময় পাবেন, তখনই ব্যায়াম করতে পারবেন, এর সমস্ত কিছু নির্ভর করে আপনার কাজের ধরনের উপর ও কিছু নিয়ম কানুন এর উপর ভিত্তি করে ।
সকালে ব্যায়াম করতে চাইলে কার্ডিও ব্যায়ামগুলো বেশি উপকারী।
ব্যায়াম করার সঠিক সময় Right Time To Exercise
স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা ও ভাবনা কম বেশি সবাই করে থাকেন। ব্যায়ামের জন্য সময় বের করা অনেকের জন্য কঠিন ব্যাপার হয়ে থাকে ।কিন্তু আমরা জানি সু-স্বাস্থ্যের জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা ছাড়া আর কোন বিকল্প পথ খুব কম আছে ।
শত ব্যস্ততার মাঝে ব্যায়ামের জন্য কিছুটা সময় বের করা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। সকালে অফিসের জন্য অনেকেই ব্যায়াম করার সুযোগ পান না ।
চাকরিজীবী ছাড়াও বিভিন্ন পেশা ধারী লোক জন নানা কাজের চাপে ব্যায়াম করার কথাই হয়তো ভুলে যান।
এমন হাজারো ব্যস্ততার মাঝে যদি একটি ব্যায়ামের সঠিক রুটিন বা নিয়ম করা থাকে তাহলে দেখবেন অনায়াসেই প্রতিদিনের দরকারি ব্যায়াম আপনি করতে পারছেন।
সকাল , দুপুর , বিকাল অথবা সন্ধ্যা বেলা সময়ভেদে ব্যায়ামের ধরনে আনতে হবে কিছু পরিবর্তন ।
Right Time To Exercise
সকাল বেলা ব্যায়াম
সকাল বেলা ব্যায়াম কার্ডিওর জন্য ব্যায়াম বেশ ভাল উপকারী। এসব ব্যায়াম গুলোর মধ্যে আছে হাঁটা, সাঁতার কাটা, দৌড়ানো, সাইক্লিং ইত্যাদি।
সকালে ব্যায়াম করার একটি ভাল দিক হলো, সারা দিনের জন্য একটি কাজ শেষ হয়ে গেল। ব্যায়াম এর জন্য আলাদা করে আর সারা দিন চিন্তা করতে হবে না।
আপনি যদি সকাল বেলা কাজ শুরু করার আগে ব্যায়াম করে নিতে পারেন তবে সারা দিন ভাল ফিটনেস থাকবেন এতে আপনার শরীরে এনার্জি টের পাবেন ।
অনেক সময় সারা দিনের কাজের পর মনে ও দেহে অলসতা ভর করে থাকে । তখন অনেকের ব্যায়াম করতে ভাল লাগে না। তাই সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর কিছুটা সময় ব্যায়ামের কাজটা সেরে নেয়াটাই ভাল।
সতর্কতাঃ- সকালে একেবারে খালি পেটে ব্যায়াম না করাই ভালো।
বিকাল বেলার ব্যায়াম
যারা সকাল বেলা একেবারে সময় দিতে পারেন না তাদের জন্য এই সময় টা উত্তম । ব্যায়ামের জন্য বিকাল বেলা সব চেয়ে উপযুক্ত সময়। যারা ভারী এক্সারসাইজ বা ওয়েট ট্রেনিং এর মত ব্যায়ামগুলো করতে চান তারা এই সময় বেছে নিতে পারেন।
বিকালের ব্যায়াম হতে পারে সাঁতার, ফুটবল খেলা, টেনিস খেলা , আরও অনেক ধরনের ব্যায়াম আছে যা আপনি চাইলে করতে পারেন । খুব কড়া রোদে ব্যায়াম করা ভাল নয় । যতটা সম্ভম রোদ এড়িয়ে ব্যায়াম করা উচিত ।
সন্ধ্যায় ব্যায়াম
সন্ধ্যা বেলার ব্যায়াম অনেকের পছন্দ । বেশিরভাগ লোকের কাছে সন্ধ্যায় ব্যায়াম করার জন্য বেশী সময় থাকে ।যারা বিজনেস করেন অথবা ছাত্র তারা সন্ধ্যার পর ব্যায়ামের সময় টা বেছে নিতে পারেন।
সূর্যের আলো থাকে না তাই অনেকে এই সময় টা বেছে নিতে পারেন ।যোগ ব্যায়াম এর জন্যও এই সময় টি বেছে নেয়া যেতে পারে ।
সন্ধ্যার ব্যায়াম মানসিক চাপ কমাতে, অথবা এন্ডোরফিন বাড়াতে এবং সাড়া দিন যে সব পরিশ্রম বা টেনশন করেছেন তা পিছনে ফেলে দেওয়ার একটি দুর্দান্ত উপায় হতে পারে এই সন্ধ্যার ব্যায়াম ।
কোন সময় এর ব্যায়াম ভাল ?
বিশেষজ্ঞরা একমত হয়েছেন যে ব্যায়াম করার জন্য সময় খুঁজে পাওয়ার অজুহাত এর চেয়ে যখন সময় পাওয়া যাবে তখনই ব্যায়াম করা ভাল ।
সময়ের অজুহাতে মোটেও ব্যায়াম না করার যে কোন সময় ব্যায়াম করা যেতে পারে ।মানুষভেদে জীবনযাপনের ধরন আলাদা হয়ে থাকে এবং কাজও ভিন্ন ভিন্ন থাকে। তাই সময়ের ওপর দোষা রোপ না করে সময় সুযোগ পেলে ব্যায়াম করে নেওয়াই ভালো ।
সকাল এবং সন্ধ্যায় ব্যায়াম করার সুবিধা রয়েছে এবং সকালের ব্যায়ামের একটি ভাল দিক থাকে ।সারাদিনের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি এবং সুস্থ শরীর গঠনের ভাল সময় হতে পারে ।তাই সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর কিছুটা সময় ব্যায়ামের জন্য বরাদ্দ রাখা ভালো।’
সবচেয়ে বড় কথা হল অবসর পেলে ব্যায়াম করে নেওয়া ভালো তবে এর জন্যে ব্যায়াম শুরুর আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া হবে।
নিয়মিত ব্যায়াম ও অনিয়মিত ব্যায়াম
ব্যায়াম এক বা দুই দিনের জন্য নয়, ব্যায়াম হল নিয়মিত অভ্যাস অনুযায়ী করার বিষয়।ব্যায়াম যত নিয়মিত ভাবে করা যাবে তেমনি এর ফল ও ভাল পাওয়া যাবে ।
আপনি এক দিন করলেন আর পাঁচ দিন করলেন না এতে তত উপকার পাবেন না বরং অসুবিধায় পড়তে হবে। ব্যায়াম এর উপাকার পেতে হলে নিয়মিত ভাবে করতে হবে ।
আবার গরম বা শীত, সকাল বা বিকেল, যে যখন ব্যায়াম করবেন সেটা নির্দিষ্ট সময় মেনে সেইম সময়ে করতে হবে । এক থেকে দেড় ঘণ্টার মত ব্যায়াম করা ভাল ।
ব্যায়ামের আগে অবশ্যই অল্প পরিমান পানি পান করে নেবেন। ব্যায়াম এর কারনে পানি শূন্যতা যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে ।
যারা ঘুমের সমস্যা বা অন্যান্য শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন, তারা রাতে ব্যায়াম করবেন না।এর জন্য দিনের অন্য কোনো বেলায় ব্যায়ামের জন্য সময় বের করে নিতে হবে।
এখন থেকে আপনার সুবিধা অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট সময় বেছে ব্যায়ামকে অভ্যাসে পরিণত করুন। এতে আপনার শরীর ও মন দুটোই প্রফুল্ল ও ভাল থাকবে। বিভিন্ন রোগবালাই থেকেও মুক্ত থাকতে পারবেন নিঃসন্দেহে ।
ব্যায়ামের সঠিক সময় ও ব্যায়াম করার সঠিক বয়স
শরীরের ফিটনেস ধরে রাখতে ব্যায়াম করে থাকেন অনেকেই। জেনে রাখা ভাল বয়স অনুযায়ী ব্যায়াম এর ধরণ পরিবর্তন হয়ে থাকে । খুব অল্প বয়স এবং খুব বেশী বয়সে ব্যায়াম করতে ডাক্তার এর পরামর্শ অবশ্যই নিতে হবে ।
ব্যায়ামের করার আগে জানতে হবে শরীরের সক্ষমতা। একেক বয়সে শরীরের কোষের গঠন ও সক্ষমতা একেক রকম হয়ে থাকে। এ ছাড়া শারীরিক সুস্থতা ও গঠন এর উপর ব্যায়ামের রকম ভেদ নির্ভর করে । এ জন্য বয়স ও শরীরের ধরন বুঝে ব্যায়াম করা উচিত।
ব্যায়ামের সঠিক সময় ও সঠিক বয়স
৪০-এর পর কি ধরনের ব্যায়াম হতে পারে
বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের শরীরের কোষ দুর্বল হতে থাকে এবং জড়তা চলে আসে।শরীরে দেখা দেয় নানা রকম জটিলতা। ব্যায়াম এসব জটিলতা থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য বয়স চল্লিশ এর বেশী হলে ব্যায়ামের কিছুটা ভারসাম্য আনা উচিত। এ সময় বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণ করে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম করুন।
বিশেষ করে হূদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায় এমন ব্যায়াম প্রাধান্য দেয়া উচিত। বয়স বাড়ার সাথে সাথে হাঁটা চলা , ফ্রি হ্যান্ড, কার্ডিও ধরনের ব্যায়াম, ইয়োগা জাতীয় ব্যায়াম বেছে নিতে হবে।
আপনি যে ধরনের ব্যায়ামই বেছে নিন না কেন চেষ্টা করতে হবে সেটা যেন নিয়মিত করতে পারেন। নিয়মিত সঠিক পন্থায় ব্যায়াম করলে শরীর ও মন ভাল থাকবে ।
ব্যায়াম করার আগে ও পরে কি করা উচিত ?
ব্যায়াম করার আগে
- আপনার ব্যায়াম এর আগে ওয়ার্ম আপ বা শরীর গরম করা গুরুত্বপূর্ণ। এটি করলে আঘাত প্রতিরোধ করতে এবং আপনার অ্যাথলেটিক কর্মক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করে ।
- ব্যায়াম করার সময় যদি ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভব করেন তবে চালিয়ে যাওয়ার আগে থামুন এবং বিশ্রাম নিন।
- আমেরিকান কলেজ অফ স্পোর্টস মেডিসিন ব্যায়াম করার পরিকল্পনা করার কয়েক ঘন্টা আগে দুই থেকে তিন কাপ জল পান করার পরামর্শ দেয়, যা ব্যায়ামের সময় হাইড্রেশনের মাত্রা সর্বাধিক করতে পারে। সঠিক হাইড্রেশন ছাড়া, আপনার শরীর তার সেরা কাজ করতে পারে না।
ব্যায়াম করার পরে
- স্বাস্থ্যকর পানীয় পান করতে হবে , যেমন নারকেল বা ডাবের পানি, গ্রিন বা ব্লাক টি এবং চকোলেট দুধ। অথবা আপনি কম চিনির স্পোর্টস ড্রিংক বেছে নিতে পারেন।
- আপনার ওয়ার্কআউট শেষ করার ৪৫ মিনিটের মধ্যে একটি স্বাস্থ্যকর স্ন্যাক বা খাবার খেতে পারেন। এটি পেশী শক্তির ক্ষয় পুনরায় পূরণ করতে এবং পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু করতে সহায়তা করবে।
ব্যায়ামের সঠিক সময় সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানতে পারলাম । নিয়ম মেনে ব্যায়াম করলে দীর্ঘ দিন ভাল ও সুস্থ থাকা যায় ।
ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা
অনুরোধ
আশা করি আমাদের এই লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে । যদি আমরা আপনার সামান্য উপকারে আসি তবে আমাদের এই লেখাটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন । অথবা লাইক ,কমেন্ট করে আমাদের সাথে থাকুন । আমরা আরও লেখা নিয়ে হাজির হব ইনশাল্লাহ । আপনার কোন মূল্যবান মতামত অথবা কিছু জানার আগ্রহ থাকলে আমাদের জানাতে পারেন । আমরা অবশ্যই উত্তর দিতে সচেষ্ট থাকবো । আপনার মূল্যবান কোন লেখা আমাদের বিডি নিউজ ওয়ালে পোস্ট করতে চাইলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন অথবা মেইল করতে এইখানে ক্লিক করুন । আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
- বিডি নিউজ ওয়াল ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন এবং যেকোনো প্রশ্ন করুতেঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বিডি নিউজ ওয়াল ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বিডি নিউজ ওয়াল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বিডি নিউজ ওয়াল সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বিডি নিউজ ওয়াল সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।