ব্যাংক লোন হল আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ধার করা অর্থ । যেমন একটি ব্যাংক থেকে আপনি নির্দিষ্ট পরিমান টাকা ধার নিলেন ।একটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সুদ সহ ফেরত দিলেন । ব্যাংক লোন পাওয়ার একদম সহজ উপায় নিয়ে আজকে আমাদের এই লেখা । ব্যাংক লোণ কি ভাবে পাবেন তার বিস্তারিত থাকছে আজকের এই লেখায় ।
ব্যাংক এর সাথে ঋণ গ্রহিতার একটি চুক্তির মাধ্যমে এই কাজটি হয়ে থাকে । ব্যাঙ্ক লোন সাধারণত বড় কেনাকাটার জন্য ব্যবহার করা হয় । যেমন একটি গাড়ি বা একটি বাড়ি, অথবা একটি ব্যবসাকে সম্প্রসারন করার জন্য।
কি পরিমাণ অর্থ ব্যাংক থেকে ঋণ করা হবে , তার সাথে সুদের হার এবং পরিশোধের শর্তাবলী, ঋণগ্রহীতার ঋণযোগ্যতা এবং ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের নীতির উপর নির্ভর করে।
একটি ব্যাঙ্ক লোন পাওয়ার জন্য, ঋণগ্রহীতাদের সাধারণত জামানত বা সহ-স্বাক্ষরকারী প্রদান করতে হয় । সেইসাথে ঋণগ্রহীতার ক্রেডিট ইতিহাস, আয় এবং অন্যান্য আর্থিক তথ্যের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধ করার ক্ষমতা যাচাই করা হয় ।
ব্যাংক লোন পেতে হলে যা যা জানা দরকার । Everything you need to know to get a bank loan.
ব্যাংক লোন পেতে হলে যা যা জানা দরকার সব বিস্তারিত আজকে এই আলোচনায় থাকবে । সুন্দর ভাবে মনোযোগ দিয়ে এই লেখা গুলো পড়তে থাকুন ।
আপনার যদি কখনো ব্যাংক লোন দরকার হয় । আশা করি এর পর আর কাউকে কোন প্রশ্ন করা লাগবে না । অন্যের সাহায্য ছাড়া একা একাই ব্যাংক লোণ তুলতে পারবেন ।
এটা একেবারেই সহজ ব্যাপার । শুধু নিচের ধাপ অনুযায়ী কাজ গুলো সুন্দর ভাবে তৈরি করুন বা থাকুন ।
ব্যাংক লোন পেতে সব সময় একটা কথা মনে রাখবেন ।ব্যাংক লোণ পেতে হলে ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত শর্তগুলো অবশ্যই পূরণ করতে । শর্ত পূরণ না হলে ব্যাংক কখনোই কাউকে লোণ দিবে না ।
ব্যাংক ঋণ কত ধরনের হয়ে থাকে ? How many types of bank loans?
ব্যাংক ঋণ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে । সহজে সব বাঙ্কে পাওয়া যায় এমন কিছু ঋণের ধরন নিচে দেয়া গেল:
ব্যক্তিগত ঋণ: ( Personal Loan )
সাধারণত ব্যক্তিগত প্রয়োজন মেটানোর জন্য এই ঋণ ।এই ধরনের ঋণ ব্যক্তিগত কাজের জন্য প্রদান করা হয়।
যারা ব্যক্তিগত উদ্যোক্তার মতো ব্যবসা শুরু করতে চান । বা ব্যক্তিগত কারণে ঋণ নেওয়ার প্রয়োজনে লোণ চান তাদের জন্য।বর্তমানে বিভিন্ন ব্যাংক ব্যক্তিগত লোণ এর নানা ধরনের প্যাকেজ দিয়ে থাকে ।
এর মধ্যে ভ্রমণ লোণ, বিবাহ লোণ, কেনাকাটা লোণ আরও অনেক ।
ব্যবসায়িক ঋণ: ( Business Loan )
এই ধরনের ঋণ ব্যবসায়ের জন্য ব্যবহার করা হয় । যা ব্যবসার প্রয়োজনমতো অর্থ বাড়াতে বা কাজের সম্প্রসারনের জন্য ব্যবহৃত হয়।
ব্যবসায়িক ঋণ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবসাকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে । যেমন একটি নতুন ব্যবসা শুরু করা। একটি বিদ্যমান ব্যবসা সম্প্রসারণ করা, সরঞ্জাম ক্রয় করা এবং নগদ কার্যক্রম পরিচালনা করা।
ব্যবসায়িক ঋণ পাওয়ার জন্য একটি ভাল ক্রেডিট ইতিহাস এবং ঋণ পরিশোধ করার সক্ষমতা প্রয়োজন । তাই ঋণের জন্য আবেদন করার আগে ব্যবসাগুলিকে তাদের আর্থিক পরিস্থিতি সাবধানে বিবেচনা করা উচিত।
হোম লোন: ( Home Loan )
বাংলাদেশে, হোম লোন হল একটি জনপ্রিয় ঋণ । এই ধরনের ঋণ বাসা কিংবা বাড়ির জন্য ব্যবহৃত হয়। এই ধরনের লোণ ব্যাক্তিগত বা প্রতিষ্ঠানিকও হতে পারে ।
ব্যক্তিদের একটি বাড়ি ক্রয় বা নির্মাণ করতে দেয়া হয় এই লোণ । গৃহঋণ বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক এবং নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান দ্বারা প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশে গৃহ ঋণকে বিস্তৃতভাবে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়:
- গৃহ ক্রয় ঋণ এবং
- গৃহ নির্মাণ ঋণ।
গৃহ ক্রয় ঋণ: House Loan
একটি বাড়ি ক্রয় ঋণ হল এক ধরনের ঋণ যা একটি আবাসিক সম্পত্তি কেনার জন্য ব্যবহৃত হয়। একটি নতুন বা পুরাতন বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট কিনতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
ঋণগ্রহীতাকে ঋণের মেয়াদে মাসিক কিস্তিতে সুদের সাথে ঋণের পরিমাণ পরিশোধ করতে হবে । যা ৫ থেকে ২০বছরের মধ্যে হতে পারে।
বাংলাদেশে বাড়ি কেনার ঋণের সুদের হার ঋণদাতা এবং ঋণের প্রকারের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। বাংলাদেশ সরকার গৃহঋণের উপর ভর্তুকি প্রদান করে থাকে ।ফলে ঋণগ্রহীতাদের জন্য আরও সাশ্রয়ী হয়।
বাড়ি নির্মাণ ঋণ:
একটি বাড়ি নির্মাণ ঋণ হল এক ধরনের ঋণ যা একটি নতুন আবাসিক সম্পত্তি নির্মাণের জন্য ব্যবহৃত হয়।
ঋণের টাকা জমি অধিগ্রহণ, নির্মাণ এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট খরচের খরচ মেটাতে ব্যবহার করা যেতে পারে। নির্মাণের অগ্রগতির সাথে সাথে পর্যায়ক্রমে ঋণ বিতরণ করা হয়।
ঋণগ্রহীতাকে ঋণের মেয়াদে মাসিক কিস্তিতে সুদের সাথে ঋণের পরিমাণ পরিশোধ করতে হবে, যা ৫ থেকে ২০ বা তার অধিক বছরের মধ্যে হতে পারে।
বাংলাদেশে গৃহ নির্মাণ ঋণের সুদের হার ঋণদাতা এবং ঋণের প্রকারের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। বাংলাদেশ সরকার গৃহঋণের উপর ভর্তুকি প্রদান করে ।যাতে ঋণগ্রহীতাদের জন্য আরও সাশ্রয়ী হয়।
বাংলাদেশে একটি গৃহ ঋণের জন্য আবেদন করার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় পেপার দরকার হয় । ঋণগ্রহীতাকে আয়ের প্রমাণ, সম্পত্তির নথি এবং ব্যক্তিগত শনাক্তকরণ নথির মতো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ ঋণদাতার কাছে একটি আবেদন জমা দিতে হবে।
ঋণদাতা আবেদন মূল্যায়ন করে এবং ঋণ প্রদান করে । গৃহ ঋণ ব্যক্তিদের বাংলাদেশে একটি বাড়ির মালিক হতে সক্ষম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শিক্ষা ঋণ: ( Education Loan )
এই ধরনের ঋণ শিক্ষার্থীদের জন্য প্রদান করা হয় ।যারা শিক্ষামুলক কাজে অধ্যয়ন করতে চায় তারা এই লোণ পেতে পারে ।
বাংলাদেশে এডুকেশন লোন হল এক ধরনের ঋণ যা শিক্ষার্থীদের তাদের শিক্ষার খরচ মেটাতে সাহায্য করে। এটি এমন শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে ।
যারা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে ইচ্ছুক কিন্তু খরচ বহন করতে অক্ষম। বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক এবং ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান শিক্ষা ঋণ প্রদান করে থাকে।
টিউশন ফি, বই এবং সরবরাহ, পরিবহন খরচ, এবং অন্যান্য সম্পর্কিত খরচ কভার করতে ব্যবহার করা হয়। এই ঋণ দুটি প্রকারে পাওয়া যেতে পারে:-
সুরক্ষিত শিক্ষা ঋণ:
একটি সুরক্ষিত শিক্ষা ঋণ হল একটি ঋণ যার জন্য জামানত প্রয়োজন, যেমন সম্পত্তি, সোনা বা অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ।
একটি সুরক্ষিত শিক্ষা ঋণের জন্য ঋণের মেয়াদ ৫ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত হতে পারে এবং সুদের হার তুলনামূলকভাবে কম থাকে।
অসুরক্ষিত শিক্ষা ঋণ:
একটি অসুরক্ষিত শিক্ষা ঋণ হল একটি ঋণ যার জামানত প্রয়োজন হয় না। একটি অসুরক্ষিত শিক্ষা ঋণের জন্য ঋণের মেয়াদ ৫ বছর পর্যন্ত হতে পারে এবং সুদের হার তুলনামূলকভাবে বেশি।
বাংলাদেশে শিক্ষা ঋণের সুদের হার ঋণদাতা এবং ঋণের প্রকারের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। বাংলাদেশ সরকার শিক্ষা ঋণের উপর ভর্তুকি প্রদান করে ।
বাংলাদেশে শিক্ষা ঋণের জন্য আবেদন করার জন্য, শিক্ষার্থীদের ভর্তির চিঠি, একাডেমিক রেকর্ড, আয়ের প্রমাণ এবং ব্যক্তিগত পরিচয়পত্রের মতো প্রয়োজনীয় নথি সহ ঋণদাতার কাছে একটি আবেদন জমা দিতে হবে।
ঋণদাতারা আবেদনটি মূল্যায়ন করে এবং আবেদনকারী যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করলে ঋণ প্রদান করে।
গাড়ি ঋণ: ( Car Loan )
এই ধরনের ঋণ গাড়ি কিনতে ব্যবহৃত হয়। গ্রাহক গাড়ী কেনার জন্য এই লোণ নিয়ে থাকে । বাংলাদেশে কার লোণ একটি জনপ্রিয় প্যাকেজ । এই লোণ ব্যক্তিদের একটি গাড়ি কিনতে সাহায্য করে ।
বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক এবং বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান দ্বারা গাড়ি ঋণ প্রদান করা হয়।
গাড়ির ঋণগুলিকে বিস্তৃতভাবে দুটি বিভাগে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে:
- নিরাপদ গাড়ি ঋণ: এবং
- অসুরক্ষিত গাড়ি ঋণ৷
নিরাপদ গাড়ি ঋণ:
একটি সুরক্ষিত গাড়ি ঋণ হল এক ধরনের ঋণ যার জন্য জামানত প্রয়োজন। যেমন গাড়ি নিজেই। ঋণগ্রহীতাকে ঋণের মেয়াদে মাসিক কিস্তিতে সুদ সহ ঋণের পরিমাণ পরিশোধ করতে হবে। এর মেয়াদ ১ থেকে ৫ বা তার অধিক বছরের মধ্যে হতে পারে। বাংলাদেশে নিরাপদ গাড়ি ঋণের সুদের হার ঋণদাতা এবং ঋণের প্রকারের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়।
অসুরক্ষিত গাড়ি ঋণ:
একটি অসুরক্ষিত গাড়ি ঋণ হল এক ধরনের ঋণ যার জামানত প্রয়োজন হয় না। ঋণগ্রহীতাকে ঋণের মেয়াদে মাসিক কিস্তিতে সুদের সাথে ঋণের পরিমাণ পরিশোধ করতে হবে, যা ১ থেকে ৫ বছরের মধ্যে হতে পারে।
বাংলাদেশে অনিরাপদ গাড়ি ঋণের সুদের হার সুরক্ষিত ঋণের তুলনায় তুলনামূলকভাবে বেশি, কারণ ঋণদাতা জামানতের প্রয়োজন না করে বেশি ঝুঁকি নেয়।
গাড়ী ঋণের জন্য আবেদন করতে, ঋণগ্রহীতাকে আয়ের প্রমাণ, ক্রেডিট ইতিহাস এবং ব্যক্তিগত শনাক্তকরণ নথির মতো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ ঋণদাতার কাছে একটি আবেদন জমা দিতে হবে। ঋণদাতা আবেদন মূল্যায়ন করে এবং ঋণ প্রদান করে যদি ঋণগ্রহীতা যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করে।
বিনিয়োগ ঋণ:( Investment Loan )
এই ধরনের ঋণ প্রজেক্ট বা ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করার জন্য ব্যবহৃত হয়।বাংলাদেশে ইনভেস্টমেন্ট লোন হল এক ধরনের ঋণ যা ব্যক্তি বা ব্যবসাকে বিভিন্ন আর্থিক পণ্য যেমন স্টক, মিউচুয়াল ফান্ড, বন্ড এবং রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করতে সাহায্য করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক এবং নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান দ্বারা বিনিয়োগ ঋণ দেওয়া হয়।বাংলাদেশে বিনিয়োগ ঋণকে বিস্তৃতভাবে দুই প্রকারে ভাগ করা হয়েছে:
- সুরক্ষিত এবং
- অরক্ষিত ঋণ।
সুরক্ষিত বিনিয়োগ ঋণ:
একটি সুরক্ষিত বিনিয়োগ ঋণ হল এক ধরনের ঋণ যার জন্য জামানত প্রয়োজন, যেমন সম্পত্তি বা অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ। সুরক্ষিত বিনিয়োগ ঋণের সুদের হার অসুরক্ষিত ঋণের তুলনায় কম।
অসুরক্ষিত বিনিয়োগ ঋণ:
একটি অনিরাপদ বিনিয়োগ ঋণ হল এক ধরনের ঋণ যার জামানত প্রয়োজন হয় না। সুরক্ষিত ঋণের তুলনায় অসুরক্ষিত বিনিয়োগ ঋণের সুদের হার বেশি।
বিনিয়োগ ঋণ সাধারণত দীর্ঘমেয়াদী ঋণ, যার ঋণের মেয়াদ ১ থেকে ১০ বা তার বেশী বছরের মধ্যে। বাংলাদেশে বিনিয়োগ ঋণের সুদের হার ঋণদাতা এবং ঋণের প্রকারের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়।
কৃষি ঋণঃ কৃষি কাজের জন্য এই ঋণ । কৃষি খেত্র অনেক বিশাল ।বলা হয় কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদন্ড।
জনসংখ্যার অধিকাংশই তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য কৃষির উপর নির্ভরশীল।কৃষি একটি ঝুঁকিপূর্ণ এবং পুঁজি-নিবিড় ব্যবসা । কৃষকদের প্রায়ই সরঞ্জাম এবং বীজ কেনার জন্য আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন হয় ।
বাংলাদেশে, বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক এবং ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান সহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান দ্বারা কৃষি ঋণ প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ সরকারও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষি ঋণ দিয়ে থাকে।কৃষি ও এর সাথে রিলেটেড যন্ত্রপাতি কেনার জন্য এই ঋণ ।
প্রবাসী ঋণঃ প্রবাসীদের নানা ধরনের সুযোগ সুবিধার জন্য সরকার একটি ব্যাংক চালু করেছেন । এর নাম দিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ।
কাজের জন্য বিদেশ যেতে যারা চান ।বা যারা বিদেশ থেকে ফেরত এসেছেন তাদের জন্য এই ঋণ ।
বাংলাদেশ থেকে বর্তমানে অনেকেই বিদেশে যান কাজের সন্ধানে।সরকার এই সব বিদেশগামী কর্মীদের আর্থিক সহায়তার জন্য বিশেষ এক ধরনের লোণ স্কিম চালু করেছেন ।
যারা বিদেশ যেতে ইচ্ছুক তাদের বৈধ ভিসা থাকলেই এই সিক্ম এর আওতায় সহজ শর্তে লোণ পেয়ে থাকেন । এই লোণ পেতে কোন জামানত প্রয়োজন হয় না ।
প্রবাসীদের নানা ধরনের সুযোগ সুবিধার জন্য সরকার পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন । কর্মসংস্থান ব্যাংক নামে আরও একটি ব্যাংক চালু আছে । এইখানে থেকে নানা ধরনের লোণ পাওয়া যায় ।
সেলারি ঋণঃ ( Salary Loan )
সেলারি লোণ বা বেতন ঋণ হল এক ধরনের ব্যক্তিগত ঋণ বা লোণ যা বেতনভোগী কর্মচারীদের ব্যাংক এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান দ্বারা দেওয়া হয়। এই ঋণটি কর্মচারীদের জন্য স্বল্পমেয়াদী আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে ।
যারা নগদ সঙ্কটের সম্মুখীন, এবং অপ্রত্যাশিত খরচগুলি কভার করার জন্য খুব দ্রত তহবিলের প্রয়োজন হয়৷তাদের জন্য এই লোণ ।
বেতন ঋণের বৈশিষ্ট্য:
ঋণের পরিমাণ: সেলারি বা বেতন ঋণের জন্য ঋণের পরিমাণ সাধারণত ৫০.০০০/- টাকা থেকে ২.০০.০০০/- টাকা পর্যন্ত হয় ঋণগ্রহীতার আয় এবং অন্যান্য কারণের উপর নির্ভর করে।
পরিশোধের সময়কাল: বেতন বা সেলারি ঋণের জন্য পরিশোধের সময়কাল সাধারণত ১২ মাস থেকে৬০ মাস বা তার চেয়ে বেশী পর্যন্ত হয়ে থাকে।
সুদের হার: বাংলাদেশে বেতন ঋণের সুদের হার বিভিন্ন ব্যাঙ্কে পরিবর্তিত হয় এবং সাধারণত প্রতি বছর 12% থেকে 18% পর্যন্ত হয়।
জামানত: বাংলাদেশে বেশির ভাগ বেতন ঋণই অনিরাপদ, অর্থাৎ ঋণের নিরাপত্তার জন্য কোনো জামানতের প্রয়োজন নেই।
যোগ্যতার মানদণ্ড: বেতন ঋণের জন্য যোগ্য হতে, ঋণগ্রহীতাকে অবশ্যই একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের বেতনভোগী কর্মচারী হতে হবে এবং তার ন্যূনতম মাসিক আয়২০.০০০/- টাকা হতে হবে।
আবেদন প্রক্রিয়া: বেতন ঋণের আবেদন প্রক্রিয়া তুলনামূলকভাবে সহজ এবং সহজবোধ্য। এখানে জড়িত পদক্ষেপগুলি রয়েছে:
আবেদন জমা: ঋণের আবেদন ফর্মটি পূরণ করুন এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা দিন।
যাচাইকরণ: ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান জমা দেওয়া নথি যাচাই করবে এবং একটি ক্রেডিট চেকও পরিচালনা করতে পারে।
ঋণ অনুমোদন: একবার ঋণের আবেদন অনুমোদিত হলে, ঋণগ্রহীতা তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঋণের পরিমাণ পাবেন।
ঋণ পরিশোধ: ঋণগ্রহীতাকে সম্মতিকৃত পরিশোধের মেয়াদে মাসিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। বিলম্বে অর্থপ্রদানের ফলে জরিমানা ফি হতে পারে এবং ঋণগ্রহীতার ক্রেডিট স্কোরকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
ক্রেডিট কার্ড লোনঃ ( Credit Card Loan )
ক্রেডিট কার্ড লোন হল বাংলাদেশে একটি জনপ্রিয় রূপ লোণ, এই লোণ কোন ব্যক্তিকে জামানত বা অগ্রিম অর্থপ্রদানের প্রয়োজন ছাড়াই দেয়া হয় । সাধারণত কোন কিছু ক্রয় করতে ক্রেডিট অ্যাক্সেস প্রদান এর মাধ্যমে এই লোণ দেয়া হয়।
ব্যাংক এবং নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান দ্বারা ক্রেডিট কার্ড ঋণ দেওয়া হয়।
বাংলাদেশে ক্রেডিট কার্ড লোনের বাজার দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে । ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে লোক কেনাকাটা, খাওয়া এবং ভ্রমণের মতো নানা দরকারি কাজ করে নিতে পারে ।
বাংলাদেশে ক্রেডিট কার্ড ঋণের সাধারণত ৩৬ মাস পর্যন্ত পরিশোধের সময় থাকে ।ঋণদাতা এবং কার্ডের ধরনের উপর নির্ভর করে সুদের হার পরিবর্তিত হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বোচ্চ সুদের হার নির্ধারণ করে । ঋণদাতারা ক্রেডিট কার্ড লোনের উপর নিতে পারে । বাংলাদেশে ক্রেডিট কার্ড লোনের জন্য আবেদন করার জন্য, ব্যক্তিদের অবশ্যই ন্যূনতম ১৮ বছর বয়স হতে হবে ।
একটি স্থিতিশীল আয়ের উত্স এবং একটি ভাল ক্রেডিট ইতিহাস সহ নির্দিষ্ট যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করতে হবে। আবেদনকারীদের আয়ের প্রমাণ প্রদান করতে হবে, যেমন বেতন বিবরণী, ট্যাক্স রিটার্ন, বা ব্যাঙ্ক বিবৃতি।
বাংলাদেশে ক্রেডিট কার্ড ঋণের একটি সুবিধা হল তারা ঋণগ্রহীতাদের সুবিধা এবং নমনীয়তা প্রদান করে। ক্রেডিট কার্ড হোল্ডাররা যখনই প্রয়োজন তখনই ক্রেডিট অ্যাক্সেস করতে পারেন ।
এস ই মি লোণঃ ( S M E Loan )
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (এসএমই) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে । বাংলাদেশ সরকার দেশে এসএমই উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ছোট এবং মাঝারি আকারের ব্যবসায়িকদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য এই লোণের প্রোফাইল করা হয়েছে।
বাংলাদেশে এসএমই ঋণ সাধারণত ব্যাঙ্ক এবং নন-ব্যাঙ্ক আর্থিক প্রতিষ্ঠান উভয়ই অফার করে । ঋণগুলি সাধারণত অনিরাপদ হয় । অর্থ ঋণগ্রহীতাদের জামানত প্রদানের প্রয়োজন হয় না। কিছু ঋণদাতা ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে ব্যক্তিগত গ্যারান্টি প্রয়োজন হতে পারে।
বাংলাদেশে ঋণদাতা এবং ঋণের প্রকারের উপর নির্ভর করে পরিশোধের সময়কাল । এই সময়কাল এক থেকে দশ বছরের মধ্যে হতে পারে। এসএমই ঋণের সুদের হার ঋণদাতা এবং ঋণগ্রহীতার ঋণযোগ্যতার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়।
ঋণগ্রহীতাদের অবশ্যই কিছু যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করতে হয় । যার মধ্যে রয়েছে একটি নিবন্ধিত ব্যবসা থাকা । একটি ভাল ক্রেডিট ইতিহাস এবং একটি ব্যবসায়িক পরিকল্পনা । যা লাভজনক বৃদ্ধির সম্ভাবনা প্রদর্শন করে।
এসএমই ঋণ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যেতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে কার্যকরী মূলধন, তালিকা ক্রয়, সরঞ্জাম বা যন্ত্রপাতি কেনা, ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং নতুন পণ্য বা পরিষেবা চালু করা।
বাংলাদেশে এসএমই ঋণের একটি সুবিধা হল যে, তারা ছোট এবং মাঝারি আকারের ব্যবসার জন্য এই লোণ খুব ভাল কাজ করে থাকে ।
বাংলাদেশে এসএমই ঋণ ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের ব্যবসার জন্য অর্থায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস । ভাল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে সাহায্য করতে পারে।
Read Also
ব্যাংক জব কি ভাবে পেতে পারেন ? Bank Job এ টু জেড গাইড লাইন ।
ব্যাংক লোণের ধরন সময় অনুযায়ী
ব্যাংক লোণের সময় অনুযায়ী ২ ধরনের হয়ে থাকে । যেমনঃ
স্বল্পমেয়াদী লোণ: বাংলাদেশের অনেক ব্যাংক নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে স্বল্পমেয়াদী ঋণ প্রদান করে থাকে । এই সবের লোণের মধ্যে ব্যবসায়িক ঋণ, ব্যক্তিগত ঋণ এবং শিক্ষা ঋণ সহ যে কোন ধরনের ঋণ হতে পারে।
ঋণগ্রহীতার নির্দিষ্ট চাহিদার উপর নির্ভর করে এই ঋণগুলির বিভিন্ন পরিশোধের শর্তাবলী এবং সুদের হার থাকতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদী লোণঃ বাংলাদেশের অনেক ব্যাংক এই ঋণ প্রদান করে । সাধারন বেশী পরিমান লোণ এর ক্ষেত্রে এই লোণ দেয়া হয় । কোন ইন্ডাস্ট্রি, বড় বিনিয়োগ, শিল্প ঋণ এর ক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদী লোণ দেয়া হয় ।
বাংলাদেশের যে যে ব্যাংক ঋণ দেয় তার একটি তালিকা এক নজরে দেখে নিনঃ
আপনার যদি ঋণের প্রয়োজন হয় বা যদি ব্যবসা শুরু করতে চান বা একটি নতুন বাড়ি কিনতে চান। বাংলাদেশের কোন ব্যাংকগুলো ঋণ দেয় তা জানা দরকার।
এখানে আমরা আপনাকে ব্যাঙ্কগুলির একটি বিস্তৃত তালিকা প্রদান করেছি যেগুলি তাদের ঋণের ধরন, সুদের হার এবং যোগ্যতার মানদণ্ড সহ ঋণ প্রদান করে।আবার সময়ের সাথে এগুলো পরিবর্তন হতে পারে ।
অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড
অগ্রণী ব্যাংক ব্যক্তিগত ঋণ, গাড়ি ঋণ, শিক্ষা ঋণ এবং গৃহ ঋণ সহ বিভিন্ন ধরনের ঋণ প্রদান করে। ব্যক্তিগত ঋণের সুদের হার 9.50% থেকে 12.50% পর্যন্ত, গাড়ি ঋণের সুদের হার 11.50% । অগ্রণী ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার যোগ্য হতে হলে আপনাকে অবশ্যই একজন বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে এবং ব্যাংকের ন্যূনতম আয়ের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে হবে।
ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড
ডাচ-বাংলা ব্যাংক ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহ ঋণ, গাড়ি ঋণ এবং ক্রেডিট কার্ড প্রদান করে। ব্যক্তিগত ঋণের সুদের হার 10.50% থেকে 15.00% পর্যন্ত। ডাচ-বাংলা ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার যোগ্য হওয়ার জন্য, আপনার ন্যূনতম মাসিক আয় 35,000 টাকা এবং একজন বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড
ইসলামী ব্যাংক হোম লোন, কার লোন, পার্সোনাল লোন, এডুকেশন লোন এবং এসএমই লোন সহ বিভিন্ন ধরনের লোন অফার করে। ব্যক্তিগত ঋণের সুদের হার 12.50% থেকে 14.50% পর্যন্ত। ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার যোগ্য হতে হলে আপনাকে অবশ্যই একজন বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে এবং ব্যাংকের ন্যূনতম আয়ের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে হবে।
প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড
প্রাইম ব্যাংক পার্সোনাল লোন, হোম লোন, কার লোন, এডুকেশন লোন এবং এসএমই লোন অফার করে। ব্যক্তিগত ঋণের সুদের হার 11.50% থেকে 14.00% পর্যন্ত। প্রাইম ব্যাংক থেকে লোনের জন্য যোগ্য হতে হলে, আপনার ন্যূনতম মাসিক আয় 25,000 টাকা এবং একজন বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে।
সোনালী ব্যাংক লিমিটেড
সোনালী ব্যাংক পার্সোনাল লোন, গাড়ি লোন, হোম লোন, এডুকেশন লোন এবং এসএমই লোন অফার করে। ব্যক্তিগত ঋণের সুদের হার 9.50% থেকে 11.50% পর্যন্ত। সোনালী ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার যোগ্য হতে হলে আপনাকে অবশ্যই একজন বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে এবং ব্যাংকের ন্যূনতম আয়ের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে হবে।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বাংলাদেশ
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ব্যক্তিগত ঋণ, গাড়ি ঋণ, হোম লোন এবং ক্রেডিট কার্ড প্রদান করে। ব্যক্তিগত ঋণের সুদের হার 10.99% থেকে 18.00% পর্যন্ত। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাঙ্ক থেকে ঋণের জন্য যোগ্য হতে হলে, আপনার ন্যূনতম মাসিক আয় 50,000 টাকা এবং একজন বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে।
ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড
ট্রাস্ট ব্যাংক ব্যক্তিগত ঋণ, গাড়ি ঋণ, গৃহ ঋণ, শিক্ষা ঋণ এবং এসএমই ঋণ প্রদান করে। ব্যক্তিগত ঋণের সুদের হার 12.00% থেকে 14.50% পর্যন্ত। ট্রাস্ট ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাওয়ার জন্য যোগ্য হতে হলে আপনাকে অবশ্যই একজন বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে এবং ব্যাঙ্কের ন্যূনতম আয়ের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে হবে।
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহ ঋণ, গাড়ি ঋণ এবং শিক্ষা ঋণ প্রদান করে। ব্যক্তিগত ঋণের সুদের হার 12.00% থেকে 17 পর্যন্ত
ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড
ইস্টার্ন ব্যাংক ব্যক্তিগত ঋণ, গাড়ি ঋণ, হোম লোন এবং ক্রেডিট কার্ড অফার করে। ব্যক্তিগত ঋণের সুদের হার 10.75% থেকে 17.50% পর্যন্ত। ইস্টার্ন ব্যাঙ্ক থেকে লোনের জন্য যোগ্য হতে, আপনার ন্যূনতম মাসিক আয় হতে হবে BDT 25,000 এবং একজন বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে।
ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড
ব্র্যাক ব্যাংক ব্যক্তিগত ঋণ, গাড়ি ঋণ, গৃহ ঋণ এবং শিক্ষা ঋণ প্রদান করে। ব্যক্তিগত ঋণের সুদের হার 12.99% থেকে 19.99% পর্যন্ত। ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার যোগ্য হতে হলে, আপনার ন্যূনতম মাসিক আয় 30,000 টাকা এবং একজন বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে।
এছারাও আরও কিছু ব্যাংক যেগুলোর তালিকা প্রয়োজন হলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন ।
ব্যাংক হতে ঋণ পেতে হলে কী কী লাগে?
এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে ঋণের জন্য দরকারি ডকুমেন্ট এর পার্থক্য দেখা যায়। তবে সব ব্যাঙ্কে যে নিয়ম টি একই ধরনের টা হল, যে ব্যাংকে লোণের জন্য আবেদন করা হয়, সেই ব্যাঙ্কে ঋণ গ্রহিতার একটি হিসাব থাকতেই হবে।
এছাড়াও আরও যে সব পেপারস লাগবে তার একটি তালিকা দেয়া হলঃ
- আয় প্রমাণের জন্য মিনিমাম ছয় মাসের পে-স্লিপ লাগবে ।
- ব্যবসার রিটার্ন দাখিলের পেপার ।
- স্যালারি সার্টিফিকেট ।
- টিআইএন ।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট ।
- ট্রেড লাইসেন্স ।
- চাকরির প্রমাণপত্র ।
- জাতীয় পরিচয়পত্র ।
- বাসার ঠিকানার বিলের কপি ইত্যাদি ।
ব্যাংক গ্যারান্টার দরকার হলে ।
গাড়ি বা ফ্ল্যাট কিনতে হলে সেসব সম্পত্তির বিস্তারিত কাগজপত্র জমা দিতে হয়। সেই সঙ্গে এসব সম্পত্তি ব্যাংক ও গ্রাহকের যৌথ নামে কিনতে হবে।লোণের টাকা সম্পূর্ণ পরিশোধ হলে গ্রাহক পুরোপুরি মালিকানা পেয়ে থাকেন।
Read Also
ব্যাংক জব Bank Job কেন লোভনীয় ? ব্যাংকের চাকরি কি ভাবে পেতে পারেন ?
ঋণ নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বা পেপার
- গ্রাহক বা ঋণ গ্রহিতার সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ২ থেকে ৬ কপি পর্যন্ত ছবি । (ব্যাংক ভেদে পরিবর্তন হয় )
- গ্রাহকের এন, আই, ডি, বা জাতীয় পরিচয় পত্র বা ড্রাইভিং লাইসেন্স বা পাসপোর্ট এর ফটোকপি ।
- গ্রাহকের সেলারি সার্টিফিকেট এর ফটোকপি ( চাকরিজীবী হলে )
- গ্রাহক ব্যবসায়িক হলে ট্রেড লাইসেন্স এর ফটোকপি ।
- গ্রাহক কোম্পানি ভুক্ত হলে কোম্পানির প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র ।
- গ্রাহকের ইনকাম ট্যাক্স বা আয়কর এর রিটার্ন বা টি আই এন ( ) কাগজ পত্র ।
- গ্রাহকের সবশেষ বা লাস্ট মিনিমাম ৬ মাসের ব্যাংক এর লেন দেনের হিসাব বা ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর কপি ।
- প্রয়োজন অনুযায়ী গ্যারান্টার এর কাগজ পত্র ।
- ব্যাংক ভেদে আরও কোন প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র লাগতে পারে
ব্যাংক লোণ দেয়ার জন্য ব্যাংক কি কি বিষয় গুরুত্ব সহকারে দেখে থাকে ?
যে কোনো ব্যাংক লোণ দেয়ার সময় একটি কমন বিষয় বিবেচনা করে । লোণের টাকা ঠিকমতো ফেরত পাবে কিনা ?
কোন গ্রাহক যদি সঠিক ভাবে প্রমাণ করতে পারেন যে, তিনি যে ব্যাংক লোণ চাইছেন, সেটা সঠিক সময়ে ঋণের টাকা, সুদসহ ফেরত দিতে পারবেন । তখনই তাকে ব্যাংক ঋণ বা লোণ দিতে রাজি হয় ।
সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে কিছু সাধারণ শর্ত রয়েছে।
ব্যাংক লোণের সুবিধা ও অসুবিধা । Advantages and Disadvantages of Bank Loans
ব্যাঙ্ক লোণ ব্যক্তিগত অথবা ব্যবসার জন্য অর্থায়নের একটি দরকারী উৎস হতে পারে। এই ক্ষেত্রে যেমন কিছু সুবিধা আছে তেমন এর বিপরীতে কিছু অসুবিধাও আছে ।নীচে ব্যাংক ঋণ এর সুবিধা ও অসুবিধা গুলো আলোচনা করা হয়েছে:-
ব্যাংক ঋণের সুবিধা: Advantage Of Bank Loan
সুদের হার কম: অর্থায়নের অন্যান্য উৎসের তুলনায় ব্যাঙ্ক লোনে সাধারণত কম সুদের হার থাকে। এর ফলে ঋণ গ্রহিতাকে আরও সাশ্রয়ী হিসেবে তৈরি করে।
দীর্ঘমেয়াদী ঋণ পরিশোধের সুযোগ: ব্যাংক ঋণেরও সাধারণত অন্যান্য ধরনের ঋণের তুলনায় দীর্ঘ পরিশোধের সুযোগ থাকে । যা ঋণগ্রহীতাদের ঋণ পরিশোধের জন্য বাড়তি সময় দেয় । এর ফলে খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
সহজ শর্তে ঋণ: ব্যাঙ্কগুলি ঋণগ্রহীতার চাহিদা এবং ঋণযোগ্যতার উপর নির্ভর করে বিস্তৃত ঋণের পরিমাণ অফার করে থাকে।
তহবিলের সহজ সুবিধা: ব্যাঙ্কগুলি বিভিন্ন ধরনের ঋণ অফার করে এবং সেগুলি পাওয়ার প্রক্রিয়া সহজ এবং আরও সুগম হয়েছে৷ ঋণগ্রহীতারা অনলাইনে ঋণের জন্য আবেদন করতে পারেন এবং অনেক ব্যাঙ্ক তাৎক্ষণিক অনুমোদন দেয়।
পূর্ববর্তী লোণের ইতিহাস: একটি ব্যাঙ্ক ঋণের নিয়মিত পরিশোধ ঋণগ্রহীতাদের একটি ইতিবাচক ক্রেডিট ইতিহাস তৈরি করতে সাহায্য করে । যা ভবিষ্যতে ঋণ নেওয়ার জন্য উপকারী হতে পারে।
ব্যাংক ঋণের অসুবিধা: Disadvantages of Bank Loans
কঠোর যোগ্যতার মানদণ্ড:
ব্যাঙ্কগুলির একটি ভাল ক্রেডিট স্কোর, পর্যাপ্ত আয় এবং সময়মত পরিশোধের ইতিহাস সহ ঋণ অনুমোদনের জন্য কঠোর যোগ্যতার মানদণ্ড রয়েছে। এটি কিছু ব্যক্তি বা ব্যবসার জন্য ঋণ প্রাপ্ত করা কঠিন করে তুলতে পারে।
জামানত:
অনেক ব্যাঙ্ক লোনের জামানত প্রয়োজন, যেমন একটি বাড়ি বা গাড়ি, ঋণ সুরক্ষিত করতে। এর মানে হল যে ঋণগ্রহীতারা ঋণে খেলাপি হলে তাদের জামানত হারানোর ঝুঁকি।
ফি এবং জরিমানা:
ব্যাংকগুলি দেরীতে অর্থপ্রদান, মিস পেমেন্ট বা ঋণের তাড়াতাড়ি পরিশোধের জন্য ফি এবং জরিমানা নিতে পারে।
আবেদন প্রক্রিয়া দীর্ঘ সূত্রটা:
একটি ব্যাঙ্ক ঋণের আবেদন প্রক্রিয়া দীর্ঘ এবং সময়সাপেক্ষ হতে পারে । ঋণ অনুমোদন ও অর্থায়নের জন্য বেশ কয়েক দিন বা সপ্তাহ লাগতে পারে।
ক্রেডিট স্কোরের প্রভাব:
একটি ব্যাঙ্ক লোনের জন্য আবেদন করা অস্থায়ীভাবে একজন ঋণগ্রহীতার ক্রেডিট স্কোর কমিয়ে দিতে পারে। যা ভবিষ্যতে ক্রেডিট পাওয়া আরও কঠিন করে তুলতে পারে।
যারা যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করে এবং ঋণ পরিশোধ করার ক্ষমতা রাখে তাদের জন্য ব্যাংক ঋণ অর্থায়নের জন্য একটি দরকারী উৎস হতে পারে।
ঋণগ্রহীতাদের একটি ঋণের জন্য আবেদন করার আগে ভালো-মন্দ বিবেচনা করা উচিত । স্বাক্ষর করার আগে তারা ঋণের শর্তাবলী ভাল ভাবে বুঝা উচিত । বুঝতে পেরেছে কিনা তা নিশ্চিত করা উচিত।
সি, আই, বি, রিপোর্ট কি এবং কেন এই রিপোর্ট ভাল হতে হবে ? CIB (Credit Information Bureau) Report .
Credit Information Bureau এর সংক্ষিপ্ত রূপ হল C.I.B । CIB (ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো) রিপোর্ট হল একটি ক্রেডিট রিপোর্ট যা বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্বারা পরিচালিত হয়।
এটি একটি কেন্দ্রীয় ডাটাবেস যা বাংলাদেশে কর্মরত সকল ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যক্তি এবং ব্যবসার ক্রেডিট সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে।
বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দিষ্ট সময় পর পর তদারকি করে একটি রিপোর্ট প্রদান করে ।এই রিপোর্ট কেই Credit Information Bureau রিপোর্ট বা সংক্ষেপে C.I.B রিপোর্ট বলে ।
CIB রিপোর্টে ঋণগ্রহীতার ক্রেডিট ইতিহাস, বকেয়া ঋণ, পরিশোধের আচরণ এবং ঋণ খেলাপির জন্য তাদের বিরুদ্ধে গৃহীত যেকোনো আইনি পদক্ষেপের মতো তথ্য রয়েছে।
রিপোর্টটি ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি দ্বারা সম্ভাব্য ঋণগ্রহীতাদের ঋণযোগ্যতা মূল্যায়ন করতে এবং অবহিত ঋণ সিদ্ধান্ত নিতে ব্যবহার করা হয়।
সিআইবি রিপোর্ট ক্রেডিট ঝুঁকি মূল্যায়নের একটি অপরিহার্য হাতিয়ার এবং এটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ঋণগ্রহীতাদের চিহ্নিত করতে সাহায্য করে যারা খেলাপি হওয়ার উচ্চ ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
এটি একই ঋণগ্রহীতার একাধিক ঋণের আবেদন শনাক্ত করে প্রতারণামূলক কার্যকলাপ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
একটি CIB রিপোর্ট পাওয়ার জন্য, ব্যক্তি বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের সাথে অনুরোধ করতে পারে ।সিআইবি রিপোর্ট বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জারি করা হয় যেখানে ঋণগ্রহীতা ঋণের জন্য আবেদন করেছেন।
ঋণের বিপরীতে জামানত
ব্যাংক গ্রাহকদের ঋণ দেওয়ার বিপরীতে ব্যাংক গুলো তাদের ঋণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ঋণ গ্রহীতার কাছ থেকে ক্রয় কিংবা বিক্রয়যোগ্য বৈধ জামানত গ্রহণ করে থাকে । এ জামানত হতে পারে মূল্যবান গহনা বা জমি বা বাড়ি বা ফ্ল্যাট বা দালানকোঠা ইত্যাদি ।
গ্রাহক যখন ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয় বা দিতে অপারগাতা প্রকাশ করে, তখন ব্যাংক একটি নির্দিষ্ট সময় পর গ্রাহকের সম্পত্তি নিলামে তুলে বিক্রি করে থাকে ।
Read Also
বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরির সুবিধা । Bangladesh Bank Job Facility .
উপসংহার
বাংলাদেশে ব্যাঙ্ক লোন পাওয়া আপনার আর্থিক চাহিদা মেটাতে একটি কার্যকর উপায় হতে পারে। বিভিন্ন ধরনের ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এই ঋণ পেতে পারেন । আছে প্রতিযোগিতামূলক সুদের হার । এর সাথে রয়েছে ঋণগ্রহীতাদের প্রয়োজন অনুসারে সেরা ঋণ বেছে নেওয়ার সুযোগ।
যাইহোক, ঋণে জর্জরিত বা ঋণ খেলাপি হওয়া এড়াতে ঋণ নেওয়ার আগে আপনার আর্থিক পরিস্থিতি এবং পরিশোধের ক্ষমতা সাবধানে বিবেচনা করা উচিত। ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এবং নির্দেশিকা অনুসরণ করে, আপনি সফলভাবে একটি ঋণ পেতে পারেন এবং আপনার আর্থিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য এটি ব্যবহার করতে পারেন।
আমাদের সাথে থাকুন
- বিডি নিউজ ওয়াল ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন এবং যেকোনো প্রশ্ন করুতেঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বিডি নিউজ ওয়াল ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বিডি নিউজ ওয়াল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বিডি নিউজ ওয়াল সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বিডি নিউজ ওয়াল সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- বিডি নিউজ ওয়াল এর সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন এই সাইট।