কম খরচে বিদেশ ভ্রমণের জন্য ৫ টি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ
ভ্রমণের জন্য ব্যাংক এর টাকা খরচ করতে হবে না । কিছুটা পরিকল্পনা এবং স্মার্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে, আপনি আপনার মানিব্যাগ খালি না করেই নতুন গন্তব্যগুলি থেকে ভ্রমণ করে আসতে পারেন । বাজেটে বিদেশ ভ্রমণে আপনাকে সাহায্য করার জন্য এখানে পাঁচটি টিপস রয়েছে।আজকে আমরা বিডি নিউজ ওয়াল কম খরচে বিদেশ ভ্রমণের জন্য ৫ টি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ নিয়ে আলোচনা করব ।
বিদেশ ভ্রমণ এখন আর শুধু ধনীদের ক্ষেত্রে একচেটিয়া না। ‘বাজেট ট্রাভেলার’ কথাটা আজকাল বেশ প্রচলিত। একটু জ্ঞান খাটালে বাজেট অল্প হলেও আপনি আশপাশের কয়েকটা দেশ অন্তত ঘুরে আসতে পারবেন। এমনকি সে জন্য কোনো ট্রাভেল এজেন্সির ‘কম দামি প্যাকেজের’ অপেক্ষায় থাকারও প্রয়োজন নেই। আপনি নিজেই সবকিছুর বন্দোবস্ত করে ফেলতে পারবেন।
কম খরচে বিদেশ ভ্রমণের কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ উপায়:
ভ্রমনের জন্য টিকিট কাটুন আগেভাগেঃ
বিমানের টিকিট যত আগে কাটবেন, ভাড়া পড়বে তত কম এর জন্য সব সময় চোখ কান খোলা রাখতে হবে। এ ছাড়া একেক এয়ারলাইনস একেক সময়ে ছাড় দেয়। এয়ারলাইনসগুলোর ফেসবুক পেজ বা ওয়েবসাইটে নিয়মিত চোখ রাখতে পারেন এই সব পেজে অনেক সময় নানা ধরনের অফার বা ছাড়ের খবর পেয়ে থাকবেন।
অনেক সময় আপনাকে হয়তো ‘কানেক্টিং ফ্লাইট’ বেছে নিতে হতে পারে। তাতে যাত্রা একটু লম্বা হয়ে যাবে, ট্রানজিটে একটা বড় সময় অপেক্ষা করতে হবে, কিন্তু টিকিটটা পাবেন কম দামে।
ভ্রমণ করুন মৌসুম ছাড়াঃ
একেক দেশে ভ্রমণের মৌসুম একেক সময়ে হয়ে থাকে । যখন পিক মৌসুম চলে, তখন বিমানের টিকিটের দাম থেকে শুরু করে হোটেল ভাড়া, সবই বেড়ে যায়। তাই চেষ্টা করুন অমৌসুমে ভ্রমণ করতে। থাইল্যান্ডে যেমন এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটকের চাপ কম থাকে। মালদ্বীপে খরচ একটু কম থাকে মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত।
অন্যদিকে দুবাইতে যদি ঘুরতে যান রমজান মাসে, তাহলে খরচ কম পড়বে। দর্শনীয় জায়গাগুলোতে ভিড় কম পাবেন। আবার ভিন্ন একটা দেশে রমজান পালনের অভিজ্ঞতাও হবে। এভাবে ভ্রমণের সময়টা একটু এদিক–ওদিক করে নিলেই দেখবেন অনেক ক্ষেত্রেই টাকা বেচে যাচ্ছে।
কম খরচে হোটেলে থাকতে চেষ্টা করুনঃ
ভ্রমনে গেলে ভারত, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, নেপালের মতো দেশগুলোতে মোটামুটি অল্প খরচেই আপনি হোটেল পেয়ে যাবেন।অনলাইনে বুকিং ডটকম, অ্যাগোডা, গুগলের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোর পাশাপাশি সরাসরি হোটেলের ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজের মাধ্যমেও এসব হোটেল বুকিং এর জন্য যোগাযোগ করতে পারেন।
আবার কোন কোন সময় সরাসরি যোগাযোগ করলে দাম অনেকাংশে কম পড়ে থাকে। বন্ধুবান্ধব মিলে যদি ভ্রমণ করেন, হোটেলে না উঠে ‘ব্যাকপ্যাকারস হোস্টেল’গুলোতে উঠতে পারেন। নানা দেশের পর্যটকের সঙ্গে এক ঘরে থাকাও কিন্তু একটা ভিন্ন ধরণের অভিজ্ঞতা।
হোটেলের ভাড়া অনেকটাই নির্ভর করে জায়গার ওপর। যেমন ধরা যাক আপনি যদি থাইল্যান্ডের ফুকেটে বেড়াতে যান, পাতং সৈকতের যত কাছাকাছি থাকবেন, ভাড়া তত বাড়বে। বড় বড় শপিং মলগুলোর কাছাকাছি যেসব হোটেল, সেগুলোরও খরচ সাধারণত বেশি। তাই একেবারে পর্যটকদের কেন্দ্রগুলোতে না থেকে ৫–১০ মিনিটের হাঁটা দূরত্বে কোনো হোটেল বেছে নিন।
কোনো কোনো দেশে হোটেলের তুলনায় এয়ারবিএনবিতে খরচ বেশ কম পড়ে। এয়ারবিএনবিকে সহজ ভাষায় বলা যায় অল্প দিনের জন্য রেডি ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়ার একটি প্ল্যাটফর্ম। এয়ারবিএনবির ওয়েবসাইট বা অ্যাপ ঘাঁটলেই নানা রকম ফ্ল্যাটের খোঁজ পেয়ে যাবেন।
গণপরিবহন ও স্কুটার ব্যবহার করুনঃ
বিদেশে ভ্রমণে গেলে উবার, গ্র্যাব, ট্যাক্সি ব্যবহার না করে যতটা সম্ভব গণপরিবহন ব্যবহারের চেষ্টা করুন। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলোতে যেমন পরিবহন পাস (এক ধরনের কার্ড) কিনে নিতে পারবেন। এই পাস ব্যবহার করেই এমআরটি, বাসসহ অধিকাংশ গণপরিবহনে চড়তে পারবেন।
গণপরিবহন বেছে নেওয়ার মাধ্যমে আপনি যে সঞ্চয়গুলি অর্জন করতে পারেন তা কল্পনা করুন। ধরা যাক আপনি মালদ্বীপ ভ্রমণ করছেন। মালে থেকে মাফুশি দ্বীপে একটি ব্যক্তিগত স্পিডবোটের দাম জনপ্রতি $25। বিপরীতে, ফেরি যাত্রা মাত্র $4 থেকে $5। যদিও এটি দেড় ঘন্টারও বেশি সময় নেয়, তবে আপনি সমুদ্রের সৌন্দর্যে আরও কিছুটা বেশি সময় উপভোগ করতে পারবেন।
এশিয়ার দেশগুলোতে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ইদানীং স্কুটার বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোতে মোটামুটি কম খরচেই স্কুটার ভাড়া করে নিতে পারবেন। যত বেশি দিনের জন্য ভাড়া নেবেন, খরচ পড়বে তত কম। স্কুটার ভাড়া করে নিলেও ঘোরাঘুরিটা অনেকটাই সাশ্রয়ী হয়ে যায়। অবশ্য তার জন্য আপনাকে স্কুটার চালাতে জানতে হবে আর আপনার আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে।
ভ্রমনের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যাপঃ
বিভিন্ন অ্যাপ আজকাল ঘোরাঘুরির ক্ষেত্রে বেশ কাজে লাগে। এসব অ্যাপে দর্শনীয় স্থানগুলোর টিকিট আপনি ‘বান্ডল প্যাকেজ’ হিসেবে কম খরচে কিনে নিতে পারবেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ক্লুকের কথা। একেক দেশে বেড়ানোর ক্ষেত্রে ক্লুকে একেক রকম অফার পাবেন। তবে সব অফারই যে আপনাকে সবচেয়ে কম খরচের নিশ্চয়তা দেবে, তা নয়। ওয়েবসাইট, ফেসবুক, ইউটিউব ঘেঁটে যাচাই–বাছাইটা আপনাকেই করতে হবে। সব মিলিয়ে আপনার ‘রিসার্চ’ যত ভালো হবে, খরচ হবে তত কম।