জাফলং এর দর্শনীয় স্থান এবং জাফলং ভ্রমন এর খুঁটি নাটি নিয়ে আজকে আমাদের আলোচনা । এই লেখায় জাফলং এর বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে । আমাদের বিডি নিউজ ওয়াল সব সময় নিখুঁতত এবং বিশ্বস্ত ডাটা দেয়ার চেষ্টা করে থাকে ।
আজ জাফলং এর বিস্তারিত থাকবে এই লেখায় । আপনি যদি জাফলং যেতে চান এবং জাফলং এর সব কিছু জানতে চান তবে আমাদের এই লেখা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন । আশা করি জাফলং সম্পর্কে এর পর আপনার আর কোন প্রশ্ন থাকবে না ।
এই লেখায় জাফলং সম্পর্কে যা যা পাবেন । এর বিস্তারিত বর্ণনা থাকবে আমাদের এই লেখায় । সুতারং সাথে থাকুন জাফলং সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ
- জাফলং পরিচিতি ( Introduction to Jaflong )
- জাফলং এর অবস্থান ( Location of Jaflong )
- জাফলং এর সৌন্দর্য ( Beauty of Jaflong )
- জাফলং কোথায় অবস্থিত ( Where is Jaflong located? )
- জাফলং কিসের জন্য বিখ্যাত ( What is Jaflong famous for? )
- জাফলং গিয়ে কি কি দেখবেন ( What will you see when you go to Jaflong? )
- জাফলং গিয়ে কোথায় থাকবেন ( Where will you stay in Jaflong? )
- জাফলং যেতে আসতে এবং থাকতে কত খরচ ( How much does it cost to travel to and from Jaflong? )
- জাফলং সম্পর্কে আরও বিস্তারিত ( More details about Jaflong )
জাফলং এর অবস্থান Location of Jaflong
বাংলাদেশের সুন্দর ভ্রমণ এর যায়গা জাফলং । সিলেট শহর থেকে উত্তর দিকে জাফলং অবস্থিত । প্রায় ৬২ কিলোমিটার দূরে গোয়াইনঘাট নামক উপজেলায় জাফলং এর অবস্থান। ম্যাপ দেখতে এখানে ক্লিক করুন ।
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তি এলাকা সিলেট এর শেষ প্রান্তে জাফলং অবস্থিত। জাফলং এর অপর পাশে ভারতের ডাকি অঞ্চলের পাহাড় থেকে ডাওকি নদী এই জাফলং দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
সিলেট বিভাগে অবস্থিত, জাফলং ভারতের সীমান্তের কাছে ডাউকি নদীর তীরে বসে আছে, যা দর্শনার্থীদের সবুজ, ঘূর্ণায়মান পাহাড় এবং স্ফটিক-স্বচ্ছ জলের মনোমুগ্ধকর মিশ্রণের প্রদর্শনে আমন্ত্রণ জানান দেয় । জাফলং বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত একটি মনোরম পর্যটন গন্তব্য, যা তার অত্যাশ্চর্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং অনন্য ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যের জন্য বিখ্যাত।
জাফলং বাংলাদেশের বর্ডার ভারতের মেঘালয় এর সীমান্ত ঘেঁষে খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত, এখানে পাহাড় আর নদীর এক অপূর্ব সম্মিলন স্থান এবং এই এলাকা বাংলাদেশের অন্যতম একটি পর্যটনস্থল কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।
জাফলং এর সৌন্দর্য Beauty of Jaflong
জাফলং এর সৌন্দর্য বর্ণনা করা এক কথায় অসম্ভব । জাফলং এর মূল সৌন্দর্য বর্ষা কালে ফুটে উঠে । বর্ষা কালে জাফলং তার আদিম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মোহিত করে। জাফলং এর সুন্দর ল্যান্ডস্কেপ সবুজ এবং ঘূর্ণায়মান পাহাড়ের অপার মনমুগ্ধকর সৌন্দর্য গর্ব করার মত ।
নদীর স্ফটিক-স্বচ্ছ জল তার বিছানা জুড়ে রঙিন পাথরগুলিকে ফুটিয়ে তোলে । এটি একটি অনন্য দর্শন যেখানে স্থানীয়রা এবং পর্যটকরা আরও সাংস্কৃতিক আকর্ষণ যোগ করে।
রাজকীয় খাসিয়া পাহাড়গুলি জাফলং-এর মোহনীয়তা বাড়িয়ে এক অত্যাশ্চর্য পটভূমি প্রদান করে। দর্শনার্থীরা চা বাগানের মধ্যে অবসরে হাঁটাহাঁটি করতে পারে বা শান্ত জলের অন্বেষণ করে নির্মল নৌকায় যাত্রা করতে পারে।
জাফলং এর মনোরম দৃশ্য এবং সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির সাথে, জাফলং প্রকৃতির আলিঙ্গনে সান্ত্বনা খোঁজার জন্য একটি প্রশান্ত আশ্রয়স্থল হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে।
জাফলং ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষে খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত, এবং এখানে পাহাড় আর নদীর অপূর্ব সম্মিলন বলে এই এলাকা বাংলাদেশের অন্যতম একটি পর্যটনস্থল হিসেবে পরিচিত।
জাফলং কিসের জন্য বিখ্যাত What is Jaflong famous for?
জাফলং পর্যটকদের জন্য এক মনোমুগ্ধকর আনন্দ প্রদান করে থাকে । জাফলং ভ্রমণ এ না আসলে এর আসল অনুভূতি বুঝা যাবে না কখনোই ।
জাফলং এর নৈসর্গিক সৌন্দর্য খাসিয়া পাহাড়ের উপস্থিতি এলাকার আকর্ষণকে আরও বাড়িয়েছে। জাফলং ভ্রমণকারীরা আশেপাশের চা বাগান এবং সবুজ পাহাড়ের ভিতর দিয়ে অবসরে হাঁটা বা হাইকিং করতে পারে, শান্ত ও নির্মল পরিবেশ এবং মনোরম দৃশ্যে একাকার হতে পারে।
যারা অ্যাডভেঞ্চার এর মত যায়গা খুঁজছেন তাদের জন্য, জাফলং এর ডাউকি নদীতে বোটিং এবং মাছ ধরার সুযোগ রয়েছে, এখানে ভ্রমণকারী বা দর্শনার্থীদের নৈসর্গিক প্রাকৃতিক দৃশ্যের প্রশংসা করার সময় নির্মল জলপথ ঘুরে দেখার সুযোগ আছে।
জাফলং এর নিকটবর্তী লালাখাল এলাকাটি তার পান্না-সবুজ জলের জন্য বিখ্যাত এবং এটি নৌকায় চড়ার জন্য একটি জনপ্রিয় স্থান, যা পর্যটকদের জন্য আরেকটি মনোমুগ্ধকর অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
সাংস্কৃতিক উত্সাহীরা আশেপাশের গ্রামগুলিতে বসবাসকারী আদিবাসী খাসিয়া সম্প্রদায়ের স্থানীয় রীতিনীতি এবং ঐতিহ্যগুলি অন্বেষণে প্রবৃত্ত হতে পারে। বন্ধুত্বপূর্ণ স্থানীয়দের সাথে মিলেমিশে তাদের জীবনযাত্রার অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে, সামগ্রিক ভ্রমণ অভিজ্ঞতার গভীরতা যোগ করে।
জাফলং এক শ্বাসরুদ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্য, সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি, এবং বিনোদনমূলক ও দর্শনীয় স্থান নিঃসন্দেহে, জাফলং বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের মধ্যে প্রশান্তি এবং রোমাঞ্চের জন্য ভ্রমণকারীদের একটি জনপ্রিয় গন্তব্য হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে।
জাফলং যে সব কারনে বিখ্যাতঃ Jaflong is famous for all the reasons:
- জাফলংঃ মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সবুজ, ঘূর্ণায়মান পাহাড় এবং ডাউকি নদীর স্ফটিক-স্বচ্ছ জলের হাতছানি রয়েছে।
- পাথর সংগ্রহঃ নানারকম পাথর সংগ্রহ কার্যক্রম, যেখানে স্থানীয়রা বিভিন্ন উদ্দেশ্যে নদীর তল থেকে রঙিন পাথর সংগ্রহ করে, পর্যটকদের ঐতিহ্যবাহী এসব কাজ দেখার সুযোগ করে দেয় ।
- খাসিয়া পাহাড়ঃ খাসিয়া পাহাড়ের মহিমান্বিত উপস্থিতি, যা জাফলং এর ল্যান্ডস্কেপকে একটি অত্যাশ্চর্য পটভূমি প্রদান করে, যা এর মনোরম লোভনীয়তা যোগ করে।
- বিনোদনঃ বিনোদনমূলক ক্রিয়াকলাপের সুযোগ যেমন বোটিং, মাছ ধরা, এবং চা বাগানের মধ্যে অবসরে হাঁটার, দর্শকদের নির্মল পরিবেশে নিজেকে নিমজ্জিত করার অনুমতি দেয়।
- আদিবাসীঃ আদিবাসী খাসিয়া সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি, যাদের গ্রামগুলি জাফলংকে ঘিরে রয়েছে, এবং এগুলো ভ্রমণকারীদের তাদের জীবনধারা এবং ঐতিহ্য সম্পর্কে অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে।
জাফলং গিয়ে কি কি দেখবেন What will you see when you go to Jaflong?
- ১) জাফলং জিরো পয়েন্ট
- ২) জাফলং মায়াবী বর্ণা/সংগ্রামপু্জি ঝর্ণা
- ৩) সংগ্রামপুঞ্জী চা বাগান
- ৪) শ্রীপুর চা বাগান
- ৫) সাত রঙ চা
- ৬) ডিবির হাওর শাপলা বিল
- ৭) আগুন পাহাড়
- ৪) শাহ পরান মাজার
- ৯) শাহ জালাল মাজার
জাফলং ভ্রমণের সেরা সময় Best time to visit Jaflong
জাফলং ভ্রমণের পরিকল্পনা করার সময় জাফলংয়ে যাবার উপযুক্ত সময় বেছে নিতে হবে । ভ্রমণকারী বা পর্যটকদের ভিড় বা বন্ধ থাকার বিষয় গুলো মাথায় রাখতে হবে । আপনার জাফলং ভ্রমণের সবচেয়ে ভাল সময় এর মাধ্যমে আপনি মনের মত করে জাফলং এর সমস্ত কিছু উপভোগ করে নিতে পারবেন ।
জাফলংয়ে যেতে হলে প্রথমে যে জিনিসটি মাথায় রাখতে হবে তা হল জাফলংয়ের আবহাওয়া অনুকূলে থাকা। ছোটখাটো সমস্যা নিয়ে চিন্তা না করে আপনি সবচেয়ে ভালো সময়ে জাফলং ঘুরে আসুন ।
যদি জাফলংয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রতি আগ্রহী হন তবে বর্ষাকালে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ভ্রমণের সেরা সময় হবে। জাফলংয়ের প্রকৃত রুপ বর্ষা কালে এক রকম এবং শীতকালে আরেক রকম । এর দুই রকম
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভোগ করতে হলে আপনাকে দুই ঋতুতে জাফলং ভ্রমনে আসতে হবে ।
আপনি যদি পাথর সংগ্রহের কার্যক্রম দেখতে চান অথবা এই সময়ের ছবি তুলতে আগ্রহী হন তবে আপনাকে শীতকালে (অক্টোবর থেকে মে) জাফলং ভ্রমনে আসতে হবে । বর্ষাকালে এখানে পাথর সংগ্রহের কোনো কার্যক্রম থাকে না।
জাফলং ভ্রমণ যাবার উপায় Ways to travel to Jaflong
জাফলং ভ্রমণ পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত প্রথমে বাংলাদেশের রাজধানী শহর ঢাকাতে আসতে হবে তার পর পরিবহন বা আভ্যন্তরীণ ফ্লাইট যোগে সিলেট থেকে জাফলং যেতে হবে ।
যেকোনো স্থান থেকে সিলেটে আসার পর স্থানীয় পরিবহনে অতবা ব্যক্তিগত পরিবহনে করে জাফলং ঘুরে আসা যায় । সিলেট জেলা সদর থেকে সড়কপথে দূরত্ব মাত্র ৬২ কিলোমিটার।
ঢাকা থেকে জাফলং যেভাবে যাবেনঃ How to go from Dhaka to Jaflong:
ঢাকা থেকে বাসে জাফলং যেতে হলে ঢাকার সায়েদাবাদ, গাবতলি, ফকিরাপুল অথবা মহাখালি অথবা উত্তরা আবদুল্লাহ পূর হতে এনা পরিবহন ,শ্যামলী পরিবহন,গ্রীন লাইন পরিবহন,সাউদিয়া পরিবহন,এস-আলম পরিবহন সহ বিভিন্ন বাস সার্তিস রয়েছে ।
ঢাকা হতে রাত ১০ টায় উঠলে সকাল ৪ থেকে ৫ টার মধ্যে সিলেট কদমতলি বাস স্ট্যান্ডে পৌছে যাবেন । ঢাকা থেকে সিলেট পৌছাতে সময় লাগবে ৬ থেকে ৮ ঘন্টার মত । নন এসি বাসের ভাড়া ৪৭০ থেকে ৬০০ টাকা। এসি বাসের ভাড়া ১০০০ থেকে ১২০০ টাকার কম বেশী।
সিলেট থেকে জাফলং ভ্রমণ: Traveling from Sylhet to Jaflong:
সিলেট থেকে আপনি বাস/মাইক্রোবাস বা সিএনজি চালিত অটোরিকশায় করে জাফলং যেতে পারেন। সময় লাগবে মাত্র ১ ঘন্টা থেকে ১.৪০ ঘন্টা এর মত । সিলেট থেকে বাস, মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকশা করে জাফলং যাওয়া যায়।
সিলেট থেকে জাফলং যাওয়ার বাস ভাড়া জনপ্রতি ৬০ টাকা। আসা-যাওয়ার জন্য মাইক্রোবাসের ভাড়া ৩০০০ থেকে ৪০০০ কম বেশী হতে পারে ।
সিলেট এর যেখানেই থাকেন না কেন সকালে খাবার দাবার শেষ করে সিএনজি রিজার্ভ করে চলে আসবেন সোবাহানি হাঁট বাস স্ট্যান্ডে । সোবাহানি হাঁট বাস স্ট্যান্ড থেকে জাফলং যাবার বাস পাওয়া যায় ।জনপ্রতি ভাড়া নিবে ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা ।
আপনি যদি বাসে করে না যেতে চান তবে সিএনজি রিজার্ভ করেও জাফলং যেতে পারেন । সারা দিনের জন্য সিএনজি রিজার্ভ ১৪০০-২০০০ টাকা । একটি সিএনজিতে ৫ জন বসতে পারবেন ।
আবার সারা দিনের জন্য মাইক্রোবাস ও রিজার্ভ নিতে পারেন । সারাদিনের জন্য লেগুনাও রিজার্ভ নিতে পারেন । লেগুনার ভাড়া নিবে ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা । আর হ্যাঁ একটি লেগুনায় ১২ থেকে ১৪ জন বসতে পারবেন।
সিলেটের দরগা গেইট হতে আম্বরখানা, কদমতলী পর্যন্ত বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। কম খরচে থাকতে চাইলে দরগা গেট এলাকায় ৫০০-১০০০ টাকায় মাঝারী মানের অনেক হোটেল পাবেন। ভালো সার্ভিসের হোটেল গুলোর মধ্যে আছে হোটেল হলি গেইট, হলি ইন, লা-ভিত্তা হোটেল, পানসি ইন, হোটেল মেট্রো ইন্টারন্যাশনাল, ব্রিটানিয়া হোটেল, হোটেল নূরজাহান গ্রান্ড ইত্যাদি অন্যতম। এসব হোটেলে থাকতে খরচ হবে ২,০০০ থেকে ১২,০০০ টাকা পর্যন্ত।
লাক্সারী হোটেল ও রিসোর্টের মধ্যে আছে রোজ ভিউ হোটেল, নাজিমগর রিসোর্ট, গ্র্যান্ড প্যালেস সহ আরও কিছু হোটেল৷ প্রতিরাতের জন্যে খরচ হবে ৮,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকা পর্যন্ত। তবে সিজন অনুয়ায়ী ভাড়া তারতম্য ঘটে।
জাফলং ভ্রমণ কি কি খাবেন What to eat while traveling to Jaflong
জাফলং একটি পর্যটন কেন্দ্র তাই এখানে আপনি কোন খাবার সমস্যায় পরবেন না । তারপরও আপনি যদি কোন খাবারে এলারজি থাকে তা বাদ দিয়ে খাবেন । আবার সিলেট থেকে খাবার সাথে করে নিয়েও আসতে পারেন ।
পর্যটন এরিয়াতে খাবারের একটু দাম বেশী থাকে ।এখানে যে কোন খাবারের দাম তুলনা মূলক কম । আপনার পছন্দ অনুসারে হোটেলে মাছ , মাংস , হাঁস এবং সাদা ভাত ও অন্যান্য খাবার খেতে পারবেন ।
জাফলং ভ্রমণ খরচ Travel expenses to Jaflong
সহজে প্রবেশাধিকারের কারণে, বেশিরভাগ পর্যটক শীতকালে জাফলং ভ্রমণ করেন। যদিও শীতকালে জিরো পয়েন্টে পৌঁছানো যায় এবং এর সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়, তবে বৃষ্টির পানির অভাবের কারণে জলপ্রপাতগুলি পূর্ণ শক্তিতে থাকার সম্ভাবনা কম।
বর্ষা ঋতুতে, প্রবল বর্ষণ জলপ্রপাতগুলিকে একটি দর্শনীয় দৃশ্যে রূপান্তরিত করে, পাহাড় থেকে প্রবাহিত নাটকীয় ক্যাসকেড, সবুজ সবুজ। তবে, বন্যার কারণে বর্ষাকালে “জিরো পয়েন্ট” পানির নিচে চলে যায়।
বর্ষা ঋতুতে, প্রবল বর্ষণ জলপ্রপাতগুলিকে একটি দর্শনীয় দৃশ্যে রূপান্তরিত করে, পাহাড় থেকে প্রবাহিত নাটকীয় ক্যাসকেড । তবে, বন্যার কারণে বর্ষাকালে “জিরো পয়েন্ট” পানির নিচে চলে যায়।
ঢাকা থেকে ট্রেনে করে জাফলং কি ভাবে যাবেন ? How to go to Jaflong from Dhaka by train ?
ঢাকা থেকে জাফলং যেতে প্রথমে ট্রেনে সিলেট যেতে হবে । এর জন্য প্রথমে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন অথবা ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশন থেকে ট্রেনে করে সিলেট যাওয়া যায়।
রাতের বেলা উপবন এক্সপ্রেসে সিলেট যেতে পারেন । এই ট্রেন টি কমলাপুর থেকে রাত ৯.৪৫ মিনিটে যাত্রা শুরু করে। ভোর ৫ টায় সিলেট পৌছায় ।
এছারাও জয়ন্তিকা ,পারাবত, কালনী এক্সপ্রেস ত্রেন্ত গুলো বেছে নিতে পারেন। শ্রেণী ভেদে ট্রেনের টিকেট মুল্য ২৬৫ থেকে ১১০০ টাকা । ট্রেনে ঢাকা থেকে সিলেট যেতে সময় লাগবে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা।
ঢাকা থেকে বাসে যেভাবে জাফলং যাবেন:
ঢাকা থেকে বাসে গেলে ঢাকা সায়েদাবাদ, গাবতলি, ফকিরাপুল, মহাখালি,উত্তরা আবদুল্লাহ পূর হতে এনা,শ্যামলী,গ্রীন লাইন,সাউদিয়া,এস-আলম সহ বিভিন্ন বাস সার্তিস রয়েছে । ঢাকা থেকে রাত ১০ টায় উঠলে সকাল ৪ থেকে ৫ টায় সিলেট কদমতলি বাস স্ট্যান্ডে পৌছে যাবেন ।
পৌছাতে সময় লাগবে ৬ থেকে ৮ ঘন্টা। নন এসি বাসের ভাড়া ৪৭০ থেকে ৬০০ টাকা। এসি বাসের ভাড়া ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা।
ঢাকা থেকে বিমানে সিলেট যাবেন কি ভাবে ?
ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউনাইটেড এয়ার লাইন্স, রিজেন্ট এয়ার, নভো এয়ার এবং ইউএস বাংলা এয়ারের বিমান এ চড়ে প্রতিদিন যাওয়া যায় সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরে।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স: US-Bangla Airlines:
ঢাকা-সিলেট রুটে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স প্রতিদিন ৪টি ফ্লাইট চলাচল করে। ঢাকা থেকে ফ্লাইটগুলো প্রতিদিন
সকাল ৮টা,
বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে,
দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে ও
সন্ধ্যা ৭টায় সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
সিলেট থেকে ঢাকায় ফেরার ফ্লাইটগুলো ছাড়ে-
সকাল ৯টা ২০ মিনিট,
দুপুর ১২টা ৫০ মিনিট, দু
পুর ২টা ৫০ মিনিট এবং
রাত ৮টা ২০ মিনিটে।
সবধরনের ট্যাক্স ও সারচার্জ মিলে ইকোনমি ক্লাসে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ঢাকা থেকে সিলেটের সর্বনিম্ন ভাড়া ৩ হাজার ৯৯৯ টাকা। রিটার্ন ভাড়া সর্বনিম্ন ৭ হাজার ৯৯৮ টাকা।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স: Biman Bangladesh Airlines:
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ঢাকা থেকে সিলেট রুটে দৈনিক চারটি সরাসরি ফ্লাইট এবং সাপ্তাহিক দুটি সংযোগকারী ফ্লাইট অফার করে। রবি ও শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া প্রথম ফ্লাইট সকাল ১১টায় ছাড়ে।
নভোএয়ার: NovoAir:
বর্তমানে ঢাকা-সিলেট-ঢাকা রুটে প্রতিদিন তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। তারা যথাক্রমে সকাল ৮.১৫ , দুপুর ১২.০০ এবং সন্ধ্যা ৭.০০ মিনিটে ঢাকা থেকে ছাড়ে। সিলেট থেকে প্রতিদিন সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে, দুপুর ১টা ২০ মিনিটে এবং রাত ৮টা ২০ মিনিটে ফ্লাইটগুলো ঢাকায় পৌঁছায়। ঢাকা-সিলেট রুটে নভোএয়ারের ফ্লাইটের সর্বনিম্ন ভাড়া, সমস্ত চার্জ সহ, ৪০০০ টাকা। ফিরতি ভাড়া ৮০০০ টাকা কম বেশী ।
জাফলং গিয়ে কোথায় থাকবেন ? Where will you stay in Jaflong?
জাফলংয়ে থাকার জন্য তেমন ভালো কোন থাকার হোটেল নেই। পর্যটক বা জাফলং ভ্রমণ কারিরা সাধারণত জাফলং এ রাত যাপন করে না ।
তার পরেও যারা থাকতে চান তারা জাফলং গ্রীন রিসোর্ট এ থাকতে পারবেন । জাফলং জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র ৩০০ গজ এর মধ্যে এই রিসোর্ট টি অবস্থিত । এই রিসোর্ট টির ভাড়া ১০০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত ।
জাফলং এর মামার বাজারে অবস্থিত হোটেল-ইনটি জিরো পয়েন্টের পর্যটন কেন্দ্র থেকে মাত্র ১.৬ কিমি দূরে অবস্থিত। এটি গাড়িতে ৭ থেকে 8 মিনিট এবং হেঁটে ১৫ থেকে ২০ মিনিটে ভ্রমণ করা যায়। এই হোটেলে রুম চার্জ প্রতি রাতে প্রায় ১৫০০-১৮০০ টাকা।
জাফলং যাবার প্রায় ৩ কিলোমিটার আগে অবস্থিত জৈন্তা হিল রিসোর্ট ভারতের সীমান্তের কাছাকাছি। রুম ভাড়া ১০০ টাকা থেকে ৮০০০ টাকা পর্যন্ত প্রতি রাতে ।
জাফলং নিয়ে সবশেষেঃ
জাফলং একটি চমৎকার পর্যটন স্পট। পাহাড় এবং নীল স্রোতে নানা রঙের পাথরে ভরা স্পট দর্শনার্থীদের জন্য বিভিন্ন ধরণের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
এখানে আপনি ঘূর্ণায়মান পাথর, গোয়াইন নদীর স্ফটিক স্বচ্ছ জল মাছ এবং অন্যান্য জলজ বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ দেখতে পাবেন।
আদিবাসী খাসিয়ারা এই অঞ্চলে হাজার হাজার বছর ধরে বাস আসছে ।তাদের রঙিন জীবনযাপন আপনার জন্য এক ধরনের অন্যরকম অনুভুতির অভিজ্ঞতা পেয়ে যাবেন।
বান্দরবানের সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থান ঘুরে আসুন খুব সহজে Bandarban Travel Point
জাফলং নিয়ে প্রশ্ন এবং উত্তরঃ Questions and Answers about Jaflong:
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের জাফলং এর দর্শনীয় স্থান কি কি? What are the sights of Jaflong in Bangladesh?
উত্তর: – বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত জাফলং তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং অনন্য আকর্ষণের জন্য বিখ্যাত।
প্রশ্ন: আপনি কি জাফলং এর পরিচিতি দিতে পারবেন?
উত্তর: – জাফলং বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত একটি মনোরম গন্তব্য। এটি তার অত্যাশ্চর্য ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য পরিচিত, যা ঘূর্ণায়মান পাহাড়, সবুজ, এবং দুর্দান্ত ডাউকি নদীর উপস্থিতি দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।
প্রশ্নঃ জাফলং এর সৌন্দর্যে কি অবদান আছে?
উত্তর: – জাফলং-এর সৌন্দর্য নিহিত রয়েছে এর শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্য, সবুজ চা বাগান, ঝরনা এবং পিয়াইন নদীর স্ফটিক-স্বচ্ছ জলে। উপরন্তু, এলাকাটি রঙিন ফুলের গাছপালা এবং বহিরাগত উদ্ভিদ দ্বারা সজ্জিত, এর আকর্ষণ বাড়িয়েছে।
প্রশ্নঃ – জাফলং এর পাথরের গুরুত্ব কি?
উত্তর: – জাফলং তার অনন্য পাথর সংগ্রহের জন্য বিখ্যাত, বিশেষ করে মূল্যবান জাফলং পাথর। “জাফলংগার শীল” নামেও পরিচিত এই পাথরগুলি এলাকার আশেপাশের নদীগর্ভে পাওয়া যায় এবং তাদের নান্দনিক আবেদন এবং নির্মাণ ও গয়না তৈরিতে সম্ভাব্য ব্যবহারের জন্য খোঁজ করা হয়।
প্রশ্নঃ – জাফলং কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: জাফলং ভারতের সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট বিভাগের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত।
প্রশ্নঃ – জাফলং কিসের জন্য বিখ্যাত? What is Jaflong famous for?
উত্তর: জাফলং তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত, যার মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক দৃশ্য, চা বাগান, জলপ্রপাত এবং নদীর তলদেশে পাওয়া অনন্য পাথরের সংগ্রহ। এটি বাংলাদেশের একটি প্রধান পর্যটন গন্তব্য হিসেবে এর গুরুত্বের জন্যও স্বীকৃত।
প্রশ্নঃ – জাফলং কোন উপজেলায় অবস্থিত?
উত্তর: জাফলং বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত।
প্রশ্নঃ – কিভাবে জাফলং ভ্রমণ করা যায়? How to travel to Jaflong?
উত্তর: জাফলং পৌঁছানোর জন্য, যাত্রীরা প্রায় ৬২ কিলোমিটার দূরে সিলেট শহর থেকে একটি সড়ক ভ্রমণ করতে পারেন। বিকল্পভাবে, এই মনোরম গন্তব্যে প্রবেশের জন্য কেউ একটি ব্যক্তিগত যানবাহন ভাড়া করতে পারেন বা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট পরিষেবাগুলি পেতে পারেন।
প্রশ্নঃ – জাফলং এর অপর নাম কি?
উত্তর: জাফলংকে প্রায়শই “বাংলাদেশের পাথর সংগ্রহের কেন্দ্র” হিসাবে উল্লেখ করা হয় কারণ নদীর তলদেশে প্রচুর পরিমাণে অনন্য পাথর পাওয়া যায়।
প্রশ্ন: – জাফলং-এ দর্শনার্থীদের জন্য কী কী সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়?
উত্তর: জাফলং দর্শনার্থীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে, যার মধ্যে হোটেল থেকে শুরু করে গেস্টহাউস, স্থানীয় খাবার পরিবেশনকারী খাবারের জায়গা এবং পিয়াইন নদীতে নৌকা ভ্রমণ এবং কাছাকাছি চা বাগান ও জলপ্রপাতের অন্বেষণের মতো দর্শনীয় স্থান এবং দুঃসাহসিক ভ্রমনের সুবিধাগুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। .
- বিডি নিউজ ওয়াল ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন এবং যেকোনো প্রশ্ন করুতেঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বিডি নিউজ ওয়াল ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বিডি নিউজ ওয়াল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বিডি নিউজ ওয়াল সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বিডি নিউজ ওয়াল সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- বিডি নিউজ ওয়াল এর সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন এই সাইট।